ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন ২০২৪

ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন ২০২৪

আর্টিকেলের বিষয়সমূহ

আজকের ডিজিটাল যুগে ই-কমার্স বিজনেস হয়ে উঠেছে একটা গেম চেঞ্জার। ইন্টারনেটের ছোঁয়ায় শপিং এর ধারণাই পাল্টে গেছে। এখন আর দোকানে গিয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হয় না, বাসায় বসেই কিনতে পারেন পছন্দের জিনিস।

গ্লোবাল ই-কমার্স মার্কেট সাইজ 2021 সালে ছিল প্রায় 4.9 ট্রিলিয়ন ডলার, যা 2026 সালে 7.9 ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই বাড়তি ডিমান্ড দেখে অনেকেই এখন ই-কমার্স বিজনেস শুরু করার কথা ভাবছেন। কিন্তু এই ফিল্ডে সাকসেস পেতে হলে জানতে হবে কিছু কী পয়েন্ট।

কিভাবে শুরু করবেন? কাস্টমার কিভাবে পাবেন? কিভাবে ম্যানেজ করবেন ইনভেন্টরি? এসব প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরি।

আর আজকের এই আর্টিকেলে আমরা এই বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করব।  তাহলে চলুন জেনে নেই ই-কমার্স বিজনেস শুরু ও স্কেল করার টিপস  সম্পর্কে বিস্তারিত।

ই-কমার্স বিজনেস শুরু করার জন্য কি কি প্রয়োজন?

ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে প্রথমেই একটা ভালো বিজনেস আইডিয়া লাগবে। তারপর টার্গেট কাস্টমার ঠিক করে নিতে হবে। এরপর একটা ইউজার-ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ বানাতে হবে যেখানে প্রোডাক্টের ডিটেইলস, ছবি, প্রাইস সহ সকল প্রকার তথ্য থাকবে।

পেমেন্ট সিস্টেম সেটআপ করতে হবে, যেমন ক্যাশ অন ডেলিভারি বা অনলাইন পেমেন্ট ইত্যাদি সমূহ। এর পাশাপাশি রিলায়েবল সাপ্লায়ার ও ডেলিভারি পার্টনার খুঁজে নিতে হবে।

মার্কেটিং প্ল্যান করতে হবে, সোশ্যাল মিডিয়া প্রেজেন্স তৈরি করতে হবে। কাস্টমার সার্ভিস সিস্টেম সেটআপ করতে হবে। লিগ্যাল কমপ্লায়েন্স মেনে চলতে হবে। এসব ঠিকমতো করলে খুব সহজেই ই-কমার্স বিজনেস শুরু করা যাবে।

ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন ২০২৪

ই-কমার্স বিজনেসে কাস্টমার অ্যাট্রাক্ট করার বেস্ট উপায় কি?

ই-কমার্স বিজনেসে কাস্টমার অ্যাট্রাক্ট করার জন্য অনেক স্ট্র্যাটেজি আছে। এগুলোর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং খুব এফেক্টিভ, কেননা  সোশ্যাল মিডিয়াতে রেগুলার পোস্ট দিয়ে এনগেজমেন্ট বাড়ানো যায় এবং খুব সহজেই কাস্টমারদেরকে  এট্রাক্ট করা যায়।

সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) করে ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং বাড়ানো যায়। ইমেইল মার্কেটিং করে পুরনো কাস্টমারদের রিইনগেজ করা যায়। অফার, ডিসকাউন্ট, ফ্রি শিপিং দিয়ে নতুন কাস্টমার আকর্ষণ করা যায়।

কনটেন্ট মার্কেটিং করে ব্র্যান্ড অথরিটি বাড়ানো যায়। ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং করে টার্গেটেড অডিয়েন্সে পৌঁছানো যায়। পেইড অ্যাডস দিয়ে ফাস্ট রেজাল্ট পাওয়া যায়। এসব স্ট্র্যাটেজি মিক্স করে ব্যবহার করলে কাস্টমার অ্যাট্রাক্ট করা সহজ হয়।

ই-কমার্স বিজনেসে কাস্টমার সার্ভিস কিভাবে ইম্প্রুভ করা যায়?

ই-কমার্স বিজনেসে কাস্টমার সার্ভিস ইম্প্রুভ করার জন্য কয়েকটা টিপস ফলো করা যায়। মাল্টিপল কমিউনিকেশন চ্যানেল অফার করা যেতে পারে, যেমন লাইভ চ্যাট, ইমেইল, ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া। কাস্টমার কোয়েরির ফাস্ট রেসপন্স টাইম মেইনটেইন করতে হবে।

পার্সোনালাইজড সার্ভিস দেয়া যেতে পারে। সেলফ-সার্ভিস অপশন দেয়া যেতে পারে, যেমন FAQ সেকশন। অর্ডার ট্র্যাকিং সিস্টেম ইম্প্লিমেন্ট করা যেতে পারে।

ইজি রিটার্ন ও রিফান্ড পলিসি থাকতে পারে। কাস্টমার ফিডব্যাক নিয়মিত কালেক্ট করে সার্ভিস ইম্প্রুভ করা যেতে পারে। স্টাফদের প্রপার ট্রেনিং দেয়া যেতে পারে। এসব ফলো করলে কাস্টমার সার্ভিস অনেক ইম্প্রুভ হবে।

ই-কমার্স বিজনেসে কিভাবে প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি ডিটারমাইন করা যায়?

ই-কমার্স বিজনেসে প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি ডিটারমাইন করার জন্য কয়েকটা ফ্যাক্টর কনসিডার করতে হয়। প্রোডাক্ট কস্ট, ওভারহেড কস্ট, শিপিং কস্ট ক্যালকুলেট করে মার্জিন সেট করতে হয়।

কম্পিটিটর প্রাইস অ্যানালাইসিস করতে হয়। টার্গেট কাস্টমারদের বাজেট কনসিডার করতে হয়।

ডিমান্ড-বেসড ডাইনামিক প্রাইসিং ইম্প্লিমেন্ট করা যেতে পারে। বান্ডল প্রাইসিং, কোয়ান্টিটি ডিসকাউন্ট অফার করা যেতে পারে।

সিজনাল প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি অ্যাডপ্ট করা যেতে পারে। প্রিমিয়াম প্রাইসিং বা পেনিট্রেশন প্রাইসিং চুজ করা যেতে পারে। নিয়মিত প্রাইস টেস্টিং করে অপটিমাল প্রাইস পয়েন্ট বের করা যেতে পারে।

এসব ফ্যাক্টর কনসিডার করে প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি ডিটারমাইন করা যায়।

ই-কমার্স বিজনেসে কিভাবে ট্রাস্ট বিল্ড করা যায়?

ই-কমার্স বিজনেসে কাস্টমার ট্রাস্ট বিল্ড করা খুব ইম্পর্ট্যান্ট। ট্রাস্ট বিল্ড করার জন্য প্রোডাক্টের ডিটেইলড ও অনেস্ট ডিসক্রিপশন দিতে হবে।

হাই কোয়ালিটি প্রোডাক্ট ইমেজ ইউজ করতে হবে। ক্লিয়ার রিটার্ন ও রিফান্ড পলিসি থাকতে হবে। পেমেন্ট সিকিউরিটি গ্যারান্টি দিতে হবে। রিয়েল কাস্টমার রিভিউ ও রেটিং শো করতে হবে।

কন্টাক্ট ইনফরমেশন ক্লিয়ারলি দিতে হবে। SSL সার্টিফিকেট ইউজ করতে হবে। ট্রাস্ট সিল ইউজ করা যেতে পারে।

সোশ্যাল প্রুফ দেখানো যেতে পারে। কাস্টমার সাপোর্ট ফাস্ট ও হেল্পফুল হতে হবে। এসব প্র্যাকটিস ফলো করলে কাস্টমার ট্রাস্ট বিল্ড করা সহজ হবে।

ই-কমার্স বিজনেসে মোবাইল অপটিমাইজেশন কেন জরুরি?

ই-কমার্স বিজনেসে মোবাইল অপটিমাইজেশন এখন খুব জরুরি। কারণ বেশিরভাগ ইউজার এখন মোবাইল ডিভাইস থেকে অনলাইন শপিং করে।

মোবাইল-ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট না থাকলে সেলস মিস হতে পারে।

মোবাইল অপটিমাইজেশন করলে পেজ লোড স্পিড বাড়ে, যা ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ইম্প্রুভ করে। গুগল সার্চ র‍্যাঙ্কিংয়ে মোবাইল-ফ্রেন্ডলিনেস একটা ফ্যাক্টর।

রেসপন্সিভ ডিজাইন ইউজ করা, ইমেজ অপটিমাইজ করা, মোবাইল নেভিগেশন সিম্পল রাখা, টাচ-ফ্রেন্ডলি বাটন ইউজ করা, মোবাইল পেমেন্ট অপশন দেয়া – এসব করে মোবাইল অপটিমাইজেশন করা যায়। এতে কনভার্শন রেট বাড়ে ও সেলস বাড়ে।

ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন ২০২৪

ই-কমার্স বিজনেসে কিভাবে ব্র্যান্ডিং করা যায়?

ই-কমার্স বিজনেসে ভালো ব্র্যান্ডিং করা খুব ইম্পর্ট্যান্ট। ব্র্যান্ডিং করার জন্য প্রথমেই একটা ইউনিক ব্র্যান্ড নেম ও লোগো ক্রিয়েট করতে হবে।

ব্র্যান্ড ভ্যালু ও মিশন ক্লিয়ারলি ডিফাইন করতে হবে। ওয়েবসাইট ডিজাইন ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি অনুযায়ী করতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় কনসিস্টেন্ট ব্র্যান্ড ভয়েস মেইনটেইন করতে হবে। কোয়ালিটি কনটেন্ট ক্রিয়েট করে ব্র্যান্ড অথরিটি বিল্ড করা যেতে পারে। কাস্টম প্যাকেজিং ইউজ করা যেতে পারে।

ইমেইল মার্কেটিং, ব্লগিং, ভিডিও মার্কেটিং করে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বাড়ানো যেতে পারে। কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স অপটিমাইজ করে পজিটিভ ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করা যেতে পারে। এসব স্ট্র্যাটেজি ফলো করে ই-কমার্স ব্র্যান্ডিং করা যায়।

উপসংহার

ই-কমার্স বিজনেস এখন অনেক পসিবিলিটি নিয়ে হাজির। ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসে সফল হতে চাইলে স্মার্ট স্ট্র্যাটেজি ফলো করা জরুরি। টার্গেট অডিয়েন্স ঠিক করে শুরু করতে হবে।

কোয়ালিটি প্রোডাক্ট, ইউজার-ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট, এফেক্টিভ মার্কেটিং – এসব মিলেই তৈরি হয় সাকসেসফুল ই-কমার্স বিজনেস। কাস্টমার সার্ভিস, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি – এসব দিকে ফোকাস করতে হবে।

ডাটা সিকিউরিটি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। মোবাইল অপটিমাইজেশন আর ব্র্যান্ডিং এর গুরুত্ব অনেক। 

তো আজকের এই পর্যন্তই,  এই  রিলেটেড আরও অন্যান্য আর্টিকেল করতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন এবং আমাদের সাথেই থাকতে পারেন। 

আর এই আর্টিকেল থেকে যদি আপনি কোন কিছু শিখে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *